ডেস্ক নিউজ: আজ সোমবার (২ এপ্রিল) সকাল ১০টায় শুরু হচ্ছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ১৩ লাখ ১১ হাজার ৪৫৭ জন শিক্ষার্থী। তত্ত্বীয় পরীক্ষা চলবে ১৩ মে পর্যন্ত। আর ১৪ থেকে ২৩ মে’র মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে ব্যবহারিক পরীক্ষা। গত বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ১১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৬ জন শিক্ষার্থী। এই হিসাবে এ বছর পরীক্ষার্থী বেড়েছে ১০.৭৯ শতাংশ। এ বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছয় লাখ ৯২ হাজার ৭৩০ জন ছাত্র এবং ছয় লাখ ১৮ হাজার ৭২৭ জন ছাত্রী।
সারাদেশের মোট আট হাজার ৯৪৩টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবার দুই হাজার ৫৪১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবে। গতবারের চেয়ে এবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ৭৯টি। আর পরীক্ষা কেন্দ্র বেড়েছে ৪৪টি। দেশের বাইরে এবার বিদেশের সাতটি কেন্দ্রে ২৯৯ জন শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশ নেবেন। এর মধ্যে ১৫৯ জন ছাত্র, ১৪০ জন ছাত্রী।
এইচএসসিতে অংশ নিতে যাওয়া আটটি সাধারণ বোর্ডের অধীন শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ লাখ ৯২ হাজার ৬০৭ জন। এছাড়া মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলিমে এক লাখ ১২৭ জন, কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসিতে (বিএম) এক লাখ ১৭ হাজার ৭৫৪ জন এবং ডিআইবিএস-এ ৯৬৯ জন শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।
এবারও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী ও যাদের হাত নেই তারা শ্রুতিলেখক নিয়ে পরীক্ষা দিতে পারবে। এ ধরনের পরীক্ষার্থীরা অতিরিক্ত সময় পাবে ২০ মিনিট। আর অটিস্টিকসহ বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত সময় পাবে ৩০ মিনিট। এ ধরনের শিক্ষার্থীরা অভিভাবক, শিক্ষক বা সাহায্যকারী নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। এ বছর ২৮টি বিষয়ের ৫৪টি পত্রের পরীক্ষা হবে সৃজনশীল প্রশ্নে। পরীক্ষা শুরু হবে সকাল ১০টায়। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই পরীক্ষা কক্ষে আসন নিতে হবে।
পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে সেট কোডের নির্দেশনা পাবেন। তারপর প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলা হবে। আর কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। তবে তার মোবাইলেও ছবি তোলা বা ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা থাকা যাবে না।
এদিকে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালে ২০০ গজের মধ্যে শিক্ষার্থী ছাড়া সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষেধ। এই আদেশ ডিএমপির অধীন কেন্দ্রগুলোতে ২ এপ্রিল এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর পর থেকে শেষ না হওয়া পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
সর্বশেষ এসএসসি পরীক্ষাসহ এর আগের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষায় ব্যাপকভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরীক্ষা শুরুর তিন দিন আগে ২৯ মার্চ থেকেই সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। পরীক্ষার দিন সকালে লটারির মাধ্যমে সেট নির্ধারণ, পরীক্ষাকেন্দ্রে কেন্দ্র সচিব ছাড়া কারও কাছে মোবাইল না রাখতে দেওয়া, ট্রেজারি বা থানা থেকে কেন্দ্র সচিবসহ পুলিশি পাহারায় প্রশ্ন নেওয়া ইত্যাদি পদক্ষেপের মাধ্যমে মন্ত্রণালয় আশা করছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসের অপতৎপরতা রোধ করা সম্ভব হবে।
মন্ত্রণালয়ের এতসব উদ্যোগের মধ্যেও অনলাইনে সক্রিয় হয়ে উঠেছে প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্র। ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপের বিভিন্ন গ্রুপে শনিবার রাত থেকেই শুরু হয়েছে শতভাগ সঠিক প্রশ্নপত্র সরবরাহের বিজ্ঞাপন ছড়ানো। কে কার চেয়ে আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস করবে, তার জন্য রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। তবে এসব চক্রকে দমন করতে প্রয়োজনে জরুরি হেল্পলাইন ৯৯৯-এ ফোন করার জন্যও সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সরকার।